জাতীয় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের স্থানে নিজেদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয় দেওয়া একদল বিক্ষোভকারীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে তারা মঞ্চ এলাকায় অবস্থান নিলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। এর পরপরই বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও এবিপিএন সদস্যরা লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর ১টা ২৬ মিনিটের দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়, যা দুপুর ২টার পরও চলমান ছিল। সংসদ ভবন এলাকা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সকাল ১০টার পর থেকেই ‘জুলাই যোদ্ধারা’ কিছু দাবিদাওয়া নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করে। দুপুর পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ, কিন্তু তারা রাজি না হলে মৃদু লাঠিচার্জ চালানো হয়।
লাঠিচার্জের পর বিক্ষোভকারীরা পাল্টা আক্রমণ চালায়। খেজুরবাগান এলাকায় পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে এবং এমপি হোস্টেলের সামনে কয়েকটি স্থাপনায় আগুন দেয়। পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বিক্ষোভকারীদের ফার্মগেট ও ধানমন্ডির দিকে ঠেলে দেয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে।
সংঘর্ষে থাকা জুলাই যোদ্ধা পরিচয় দেওয়া আশিক শাহরিয়ার শাফি কালবেলাকে বলেন, `আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছিলাম। বিনা উসকানিতে পুলিশ আমাদের লাঠিপেটা করে সংসদ ভবন থেকে বের করে দেয়। এরপর তারা আমাদের লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছুড়ে। এখনো আমাদের ওপর পুলিশ হামলা চালাচ্ছে।’
জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে কথা হলে তারা দাবি করেন, পুলিশি অ্যাকশনে তাদের অন্তত ২৫ জন আহত হয়ে ঢামেকে চিকিৎসার জন্য গেছে। ছত্রভঙ্গ হয়ে তারা জিয়া উদ্যান ও ফার্মগেট এলাকায় অবস্থান করছে। সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা আবার এক জোট হয়ে সংসদ ভবনের সামনে আসবে।
বেলা দুইটা ৫০ মিনিটে এই বিষয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার ইবনে মিজান কালবেলাকে বলেন, ‘পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। সংসদ ভবনের সামনের অংশ পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আশেপাশে তারা অবস্থান করছে। কয়েক জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে সংঘর্ষ চলছে। আমি একটা ক্ষুদ্র অংশ দেখছি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সব সিনিয়র কর্মকর্তারা মাঠে আছেন। তাই সার্বিকভাবে এখনো আমার একার পক্ষে কিছু বলা যাচ্ছে না। এখনো অভিযান অব্যাহত আছে।’
গ্রেপ্তারের কোনো নির্দেশনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখনো এই ব্যাপারে আমি কোনো কিছু জানি না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিস্তারিত জানাব।’