নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে শহরের পুরনো সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভাজন—জন্মসূত্রে নিউইয়র্কার বনাম নতুন প্রজন্মের অভিবাসী ভোটারদের দ্বন্দ্ব। শহরের চরিত্র, শ্রেণি, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির এই পার্থক্যই এখন পুরো নির্বাচনের কেন্দ্রবিন্দু।
উগান্ডায় জন্ম নেওয়া ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম রাজনীতিক জোহরান মামদানি এখন নিউইয়র্ক রাজনীতির সবচেয়ে আলোচিত নাম। তাঁর উত্থান শুধু স্থানীয় রাজনীতিতেই নয়, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় নেতৃত্ব নিয়েও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
জুনের ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্যুমোকে ৭ পয়েন্টে পরাজিত করে স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান মামদানি বড় চমক দেখান। তরুণ ও নতুন প্রজন্মের ভোটারদের মধ্যে তিনি ব্যাপক সমর্থন পেয়েছেন—বিশেষত ব্রুকলিনের বুশউইক, উইলিয়ামসবার্গ ও বেডফোর্ড-স্টাইভেসান্টের মতো গেন্ট্রিফায়েড এলাকায়। এসব অঞ্চলের তরুণ পেশাজীবী, শিল্পী ও প্রযুক্তিখাতের কর্মীরা মামদানির প্রগতিশীল নীতিকে নিজেদের কণ্ঠস্বর হিসেবে দেখছেন।
অন্যদিকে, ক্যুমো শক্ত অবস্থানে আছেন বহির্বোরো—কুইন্স, ব্রুকলিন, ব্রঙ্কস ও স্টাটেন আইল্যান্ডের কৃষ্ণাঙ্গ ও লাতিনো অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে, যেখানে গেন্ট্রিফিকেশনের প্রভাব তুলনামূলক কম। ম্যানহাটনের আপার ইস্ট সাইড ও আপার ওয়েস্ট সাইডের মতো ঐতিহ্যবাহী, উচ্চবিত্ত এলাকাতেও তাঁর সমর্থন শক্তিশালী। এই অঞ্চলগুলোর তুলনামূলক বয়স্ক ভোটাররা শহরের স্থিতিশীলতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অভিজ্ঞ নেতৃত্বকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন।
সিবিএস নিউজের সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, গত ১০ বছরের মধ্যে যারা নিউইয়র্কে এসেছেন, তাদের মধ্যে মামদানি ক্যুমোর চেয়ে ৫১ শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে। তবে শহরে এক দশকের বেশি সময় ধরে থাকা ভোটারদের মধ্যে এই ব্যবধান কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ পয়েন্টে।
জন্মসূত্রে নিউইয়র্কারদের মধ্যে ব্যবধান আরো কম, যা শহরের রাজনৈতিক মানচিত্রে এক নতুন বাস্তবতা তৈরি করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিভাজন কেবল প্রজন্ম বা পাড়া পরিবর্তনের নয়- এটি শহরের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পুনর্গঠনেরও প্রতিফলন।
নতুন প্রজন্ম যেখানে ভাড়া নিয়ন্ত্রণ, গণপরিবহন ভর্তুকি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের মতো ইস্যুতে সরব, সেখানে পুরনো বাসিন্দারা নিরাপত্তা, ট্যাক্স ও গৃহহীনতা কমানোয় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
এক বিশ্লেষকের ভাষায়, এই নির্বাচন কেবল একজন মেয়র নয়, বরং নিউইয়র্কের আত্মা কে ধারণ করবে- সেই প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজছে।
জোহরান মামদানি তাঁর প্রচারে নিজেকে ‘জনগণের মেয়র’ হিসেবে তুলে ধরছেন। অন্যদিকে ক্যুমো নিজেকে ‘অভিজ্ঞ প্রশাসক’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। আসছে নভেম্বরের মেয়র নির্বাচন এখন নিউইয়র্ক সিটির দুই ভিন্ন বাস্তবতার সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে- একদিকে দ্রুত পরিবর্তিত তরুণ ও প্রগতিশীল শহর, অন্যদিকে পুরনো, অভিজ্ঞ ও ঐতিহ্যনির্ভর শহর। যে প্রার্থী এই দুই দুনিয়াকে এক সেতুবন্ধনে আনতে পারবেন, তিনিই নির্ধারণ করবেন নিউইয়র্কের আগামী অধ্যায়।

মামদানি জিতলে নিউইয়র্ক দখল করবেন
ট্রাম্প, বিস্ফোরক মন্তব্য ক্যুমোর
মামদানির প্রচার শিবির দ্রুত ক্যুমোর বক্তব্যের জবাব দিয়ে জানায়, আসলে ‘ট্রাম্প ও তাঁর ধনী দাতারা ক্যুমোকেই তাঁদের পছন্দের প্রার্থী হিসেবে দেখছেন।’
এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ট্রাম্প যখন লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড পাঠিয়েছিলেন, ক্যুমো তখন নিউইয়র্কবাসীকে আতঙ্কিত না হতে বলেছিলেন। ট্রাম্প যখন অভিবাসী প্রতিবেশীদের দেশছাড়া করছিলেন, তখন ক্যুমো তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক পরামর্শে ব্যস্ত ছিলেন।
তাদের বক্তব্য, নিউইয়র্কবাসী জানেন- অ্যান্ড্রু ক্যুমো ট্রাম্পের জন্য লাল গালিচা বিছিয়ে দেবেন, আর মামদানি হবেন সেই মেয়র, যিনি ট্রাম্পের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়বেন এবং নাগরিকদের জন্য আরো সাশ্রয়ী শহর গড়বেন।
ক্যুমো এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তিনি ট্রাম্পের পছন্দের প্রার্থী নন এবং নিউইয়র্ক টাইমস-এ প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনও মিথ্যা। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে নির্বাচনের কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ক্যুমোর মতে, এখন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে এক ধরণের গৃহযুদ্ধ চলছে- একদিকে ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্টরা, অন্যদিকে ঐতিহ্যবাহী ডেমোক্র্যাটরা।
তিনি বলেন, ‘মামদানি ও তাঁর গ্রুপের লক্ষ্য- পার্টিকে চরম বামপন্থায় ঠেলে দেয়া, যা মূল ডেমোক্র্যাটিক আদর্শ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।’
মেয়র এরিক অ্যাডামস নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলত তিনজন- ক্যুমো, মামদানি ও রিপাবলিকান কার্টিস স্লিওয়ার মধ্যে।
ক্যুমো বলেন, অ্যাডামস সরে দাঁড়িয়ে মহানুভবতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু এখন নিউইয়র্কবাসীর উচিত মামদানির জয়ের আশঙ্কা নিয়ে চিন্তিত হওয়া, কারণ এর ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে।
গভর্নর পদ ছেড়ে দেয়ার পর থেকে ক্যুমো নানা বিতর্কে জর্জরিত। ২০২১ সালে তাঁর বিরুদ্ধে ১১ নারীর ওপর যৌন হয়রানির অভিযোগে তদন্ত হয়, যদিও তিনি কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত হননি।
‘দ্য ভিউ’ অনুষ্ঠানে ক্যুমো বলেন, ‘ওই সময় আমাকে কঠিন শিক্ষা নিতে হয়েছে। এখন আমি অনেক বেশি সতর্ক- কোনো রসিকতা বা মন্তব্য করার আগে শতবার ভাবি।’
অন্যদিকে, মামদানি ইতিমধ্যেই গভর্নর ক্যাথি হোকুলসহ বহু প্রভাবশালী ব্যক্তির সমর্থন পেয়েছেন। জরিপে দেখা যাচ্ছে, এখনও তিনি এগিয়ে আছেন।
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন ঘিরে এখন এক জটিল ও তীব্র রাজনৈতিক লড়াই শুরু হয়েছে। একদিকে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্যুমোর ‘ট্রাম্প আতঙ্কের’ বক্তব্য, অন্যদিকে মামদানির শিবিরের ‘প্রতিরোধের প্রতিশ্রুতি’- এই দ্বন্দ্বই আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে নিউইয়র্কের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।
মামদানিকে ঘিরে ডেমোক্র্যাটশিবিরে অস্থিরতা
মামদানিকে ঘিরে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরেও তীব্র অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। পার্টির শীর্ষ নেতাদের একাংশ প্রকাশ্যে তাঁর পক্ষে অবস্থান না নেয়ায় স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে বিভক্তি আরো স্পষ্ট হচ্ছে।
অ্যাক্সিওস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওয়াশিংটন ও নিউইয়র্কের অনেক ডেমোক্র্যাটিক নেতা অভিযোগ করেছেন, পার্টির নেতৃত্ব- বিশেষত ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির (ডিএনসি) চেয়ারম্যান কেন মার্টিন- মামদানির প্রচারে যথেষ্ট সহায়তা করছেন না।
তাঁদের দাবি, মার্টিন ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা অতিরিক্ত সতর্ক এবং মামদানির প্রগতিশীল অবস্থান নিয়ে বিব্রত।
নাম প্রকাশ না করে একজন নেতা বলেন, কেন মার্টিনের টিম কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না। তাঁরা খুবই সীমাবদ্ধভাবে কাজ করছেন।
ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট হিসেবে পরিচয় দেয়া মামদানি নিউইয়র্কের প্রগতিশীল রাজনীতিতে নতুন মুখ। তবে তাঁর কিছু প্রতিশ্রুতি পার্টির ভেতরেই তীব্র বিতর্ক তৈরি করেছে।

নিউইয়র্কে সফররত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের অঙ্গীকার, সরকারি অর্থে পরিচালিত গ্রোসারি স্টোর চালুর প্রতিশ্রুতি, ভাড়া-নিয়ন্ত্রিত অ্যাপার্টমেন্টে ভাড়া স্থগিত রাখা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘গিফটেড’ কর্মসূচি বাতিলের মতো অবস্থান নিয়ে আলোচনায় আছেন জোহরান মামদানি। অতীতে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগকে ‘বর্ণবাদী ও জননিরাপত্তার জন্য হুমকি’ হিসেবে আখ্যা দেওয়াও তাঁকে কেন্দ্র করে বিতর্ক বাড়িয়েছে। তাঁর এসব মন্তব্য জাতীয় পর্যায়ের অনেক ডেমোক্র্যাট নেতাকে অস্বস্তিতে ফেলেছে—বিশেষত তাঁদের, যারা মনে করেন মামদানির বক্তব্য ইসরায়েল-বিরোধী বা অতিবাম ঘরানার ভাবমূর্তি তৈরি করছে।
প্রাইমারিতে মামদানির জয় পাওয়ার পর ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির (ডিএনসি) চেয়ারম্যান কেন মার্টিন তাঁকে অভিনন্দন জানালেও পরে আর তাঁর প্রচারে সক্রিয় থাকেননি। সূত্র জানায়, অভিনন্দন বার্তাটিও প্রকাশিত হয় ডিএনসি নির্বাহী পরিচালক রজার লাও-এর চাপে। রজার লাও বলেন, “ডিএনসি সব সময় প্রাইমারি ভোটারদের সিদ্ধান্তের পাশে থাকে। ভোটাররা মামদানিকেই বেছে নিয়েছেন, তাই আমরা তাঁকে সমর্থন জানিয়েছি।”
অন্যদিকে নিউইয়র্ক স্টেট ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান জে জ্যাকবস গত সেপ্টেম্বরেই ঘোষণা করেন, তিনি মামদানিকে সমর্থন করবেন না। তাঁর যুক্তি, ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্টদের নীতি পার্টির মূলধারার মূল্যবোধের সঙ্গে মেলে না। তবে এ অবস্থান দলের ভেতরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। পার্টির নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ও নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের সাবেক স্পিকার ক্রিস্টিন কুইন প্রকাশ্যে জ্যাকবসের সমালোচনা করে মামদানির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
মামদানির সাফল্য কংগ্রেসনাল নেতৃত্বকেও বিভক্ত করেছে। নিউইয়র্কের দুই শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতা—হাউস মাইনরিটি লিডার হাকিম জেফরিজ ও সিনেট মাইনরিটি লিডার চাক শুমার—এখনও পর্যন্ত তাঁর প্রতি সমর্থন জানাননি। সিনেটর ক্রিস্টিন গিলিব্র্যান্ডও নীরব রয়েছেন। তবে গভর্নর ক্যাথি হোকুল আনুষ্ঠানিকভাবে মামদানির পাশে দাঁড়িয়েছেন। ফলে প্রগতিশীল ভোটারদের উচ্ছ্বাস আর দলীয় নেতৃত্বের অস্বস্তির মাঝেই মামদানির প্রচার এখন পুরো ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জন্য এক ধরনের পরীক্ষায় পরিণত হয়েছে।
এদিকে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে চমক দিয়েছেন রিপাবলিকান প্রবীণ নেতা ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাইকেল বি. মুকেসি। তিনি ঘোষণা করেছেন, নিজ দলের প্রার্থীর পরিবর্তে ভোট দেবেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু ক্যুমোকে। মুকেসি বলেন, “এ নির্বাচন দলীয় আনুগত্যের নয়, শহর রক্ষার লড়াই।” রোনাল্ড রিগান প্রশাসনের ফেডারেল জাজ এবং জর্জ ডব্লিউ বুশ সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মুকেসি চার দশকেরও বেশি সময় রিপাবলিকান রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
ইসরায়েল নিয়ে বিতর্কের পর ইহুদি ভোটারদের আস্থা ফেরাতেও উদ্যোগী হয়েছেন মামদানি। ব্রুকলিনে এক ইহুদি চলচ্চিত্র পরিচালকের বাড়িতে আয়োজিত সীমিত পরিসরের বৈঠকে অর্ধশতাধিক মডার্ন অর্থডক্স ইহুদি অংশ নেন। সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে মামদানি আশ্বস্ত করেন যে, সিনাগগের নিরাপত্তা বজায় রাখতে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এক অতিথির অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, “ইসরায়েল বা ফিলিস্তিনের সমর্থকরা যদি নিজেদের শহরেই নিরাপদে চলাফেরা করতে না পারেন, তাহলে কেউই লাভবান হয় না।”
মামদানি যদিও ইসরায়েলবিরোধী বয়কট আন্দোলনের প্রতি সমর্থন বজায় রেখেছেন, তবে শহরের ইসরায়েল ডে প্যারেডে পুলিশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি প্রগতিশীল ইহুদি রাজনীতিকদের পাশাপাশি রক্ষণশীল ও হ্যাসিডিক নেতাদের সঙ্গেও ধারাবাহিকভাবে দেখা করছেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তিনি উইলিয়ামসবার্গের সাটমার কমিউনিটির দুই প্রভাবশালী রাব্বির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। রোশ হাশানায় ব্রুকলিনের প্রগতিশীল সিনাগগ কোলট খায়েনু এবং ইয়োম কিপুর উপলক্ষে ল্যাব শুল-এর প্রার্থনায় অংশ নেন তিনি। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসম্যান জেরি ন্যাডলার ও সিটি কম্পট্রোলার ব্র্যাড ল্যান্ডার—দুজনেই ইহুদি এবং মামদানির প্রকাশ্য সমর্থক।
নিউইয়র্ক জ্যুইশ অ্যাজেন্ডার নির্বাহী পরিচালক ফিলিসা উইজডম বলেন, “ইহুদি সমাজে মামদানিকে নিয়ে একক কোনো অনুভূতি নেই—কেউ তাঁকে আশাবাদীভাবে দেখছেন, কেউ বা উদ্বিগ্ন। তবে তিনি যে সংলাপের জন্য উন্মুক্ত, তা ইতিবাচক।”
তবু বাস্তবতা হলো—ইসরায়েলবিরোধী মন্তব্যের কারণে প্রগতিশীল শিবিরের মধ্যেও কিছুটা অস্বস্তি রয়ে গেছে। চাপের মুখে মামদানি ইতোমধ্যে হামাসের নৃশংসতার নিন্দা জানিয়েছেন এবং সমর্থকদের ‘গ্লোবালাইজ দ্য ইন্তিফাদা’ স্লোগান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
এখন সবার দৃষ্টি ৪ নভেম্বরের নির্বাচনের দিকে—সেদিনই নির্ধারিত হবে, বিজয়মাল্য পরবেন জোহরান মামদানি নাকি অ্যান্ড্রু ক্যুমো।