জাতিসংঘে স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা। তার সেই বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়—সরকারি কোনো অনুষ্ঠানে কেন তিনি একাই উপস্থিত ছিলেন? তবে ডা. তাসনিম জারা জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানটি সরকারি ছিল না।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন জারা। তার পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু দেওয়া হলো।
‘স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কথা বলছি এমন একটি ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে গতকাল। অনেকে প্রশ্ন করছেন, সেখানে শুধু আমাকে কেন দেখা গেল, অন্য দলের রাজনীতিবিদরা নাই কেন। অভিযোগ এসেছে যে হয়তো আমাকে আলাদা করে তুলে ধরার চেষ্টা হচ্ছে। এটি পরিষ্কার করা জরুরি।
গতকাল সরকার আমাদের তিনটি অফিসিয়াল প্রোগ্রামের শিডিউল দিয়েছিল (সকাল ৮টা, দুপুর ১টা, ও সন্ধ্যা ৬টা)। প্রতিটি প্রোগ্রামের মাঝখানে কয়েক ঘণ্টা করে অবসর সময় ছিল। আমি খুঁজছিলাম, এই অবসর সময় কীভাবে সবচেয়ে কার্যকরভাবে কাজে লাগানো যায়।
প্রতি বছর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সময় নানা ধরনের সাইড ইভেন্ট হয়, যা আয়োজন করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আইএনজিও ও থিংকট্যাঙ্ক। চাইলে এসবে যোগ দিয়ে সময়টাকে অর্থবহ করা যায়। সংশ্লিষ্ট মানুষের সঙ্গে প্রফেশনাল ভাবে পরিচিত হওয়া যায়।
এক সহকর্মী আমাকে জানালেন যে মেডট্রনিক ল্যাবস (বিশ্বের সবচেয়ে বড় মেডিকেল ডিভাইস প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান) ও ব্র্যাক মিলে বাংলাদেশের প্রাইমারি হেলথ কেয়ার নিয়ে একটি আলোচনার আয়োজন করছেন। সময়টা আমার অবসর সময়ের মধ্যে পড়ছিল, তাই অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।
রাজনীতিতে আসার আগে আমার কোম্পানি সহায় হেলথ থেকে মেডট্রনিক ল্যাবস ও ব্র্যাকের সঙ্গে পার্টনার হিসেবে কাজ করেছি। সেই প্রজেক্টের লক্ষ্যও ছিল বাংলাদেশের প্রাইমারি হেলথ কেয়ারে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে সেবা দেওয়া।
তখন আমি আমার পূর্ব পরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। যেহেতু এটি ইনভাইট-অনলি অনুষ্ঠান, তাদের কাছে আমন্ত্রণ চাই। তারা দ্রুতই আমাকে ইনভাইটেশন পাঠান, এবং আমি সেই আমন্ত্রণেই প্রোগ্রামে যাই। সরকার থেকে আমাকে সেখানে পাঠানো হয়নি। হয়তো এই জন্যই দেখবেন সরকারের প্রতিনিধিরা এক পাশে বসেছেন। আমাকে অন্য পাশে বসার জায়গা দেওয়া হয়েছে।
কিছু গণমাধ্যমে বলা হয়েছে- আমি এখানে প্রাইমারি হেলথ কেয়ার নিয়ে ব্লুপ্রিন্ট দিয়েছি। এটি সঠিক নয়। সেশনটির টাইটেল ছিল “ব্লুপ্রিন্ট,” যেখানে অন্যরা ‘কি নোট’ দিয়েছেন। আমি শুধু মেডিকেল ডিভাইস, প্রযুক্তি ও ইনোভেশন নিয়ে একটি মন্তব্য করেছি। কারণ এই প্রোগ্রামের আলোচনার ফোকাস সেই দিকেই ছিল।
আরেকটি বিষয় হলো—এটি একমাত্র অনুষ্ঠান নয় যেখানে আমি ব্যক্তিগত আমন্ত্রণে গিয়েছি। প্রতিদিনের অবসর সময় নানা কাজে ব্যয় করার চেষ্টা করি। অন্য নেতারাও তাদের অবসর সময়ে ভিন্ন ভিন্নভাবে কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছেন।