জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আগমন ঘিরে সরব হয়ে উঠেছে নিউইয়র্কের বাঙালিপাড়া হিসেবে পরিচিত কুইন্সের জ্যাকসন হাইটস। শুধু সরব নয়, এই এলাকা এখন কার্যত বাংলাদেশি রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। গেল সপ্তাহজুড়েই সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করেছে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের মুখোমুখি অবস্থান ও ধাওয়া–পাল্টাধাওয়ার ঘটনায়। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা।
প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীরা নিউইয়র্কে পৌঁছান ২২ সেপ্টেম্বর, সোমবার বিকেলে। তবে তার আগের রাতেই জ্যাকসন হাইটসে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ২১ সেপ্টেম্বর, রোববার রাত আটটার পর ডাইভারসিটি প্লাজায় দুই দলের অন্তত পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী স্লোগান ও মিছিল নিয়ে মুখোমুখি হন। উত্তেজনার মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে। একপর্যায়ে নিউইয়র্ক পুলিশ এসে দুই পক্ষকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।
ডাইভারসিটি প্লাজার পাশের বাংলাদেশ স্ট্রিটেও একই রাতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে আওয়ামী লীগবিরোধী ইউটিউবার মাসুম রহমান উপস্থিত হলে যুবলীগের এক কর্মী দলীয় নেতা-কর্মীদের ডাক দেন। পরিস্থিতি তীব্র হয়ে উঠলে উভয়পক্ষ থেকেই পুলিশে কল দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে আওয়ামী লীগ কর্মীদের সরে যেতে বাধ্য করে।
অল্প সময়ের মধ্যে অন্তত ১০ জন করে পুলিশের দুটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এরপর বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থকসহ সাধারণ মানুষকেও সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। রাতের শেষে পরিস্থিতি শান্ত হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
এদিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ২২ সেপ্টেম্বর সোমবার বিমানবন্দরে বিক্ষোভ শেষে সন্ধ্যার পর জ্যাকসন হাইটসে সমবেত হন। রাতে সাড় ৯টার দিকে বিএনপিসমর্থিত এক ব্যক্তি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, যুবলীগ নেতা মিজান তাঁকে ছুরি দিয়ে মারতে এসেছেন। এরপর জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ স্ট্রিট (৭৩ স্ট্রিট) থেকে পুলিশ মিজানকে আটক করে। এসময় তিনি ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। তাঁর সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও স্লোগান দেন। ২৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতে আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন মিজান।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, সেপ্টেম্বর এলেই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে মুখর থাকে জ্যাকসন হাইটস। কিন্তু কিছু মানুষের উচ্ছৃঙ্খল আচরণে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়। সাধারণ পথচারী ও এলাকার বাসিন্দারা বিপাকে পড়েন। এতে তাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পথচারিরা বিব্রত হন।