জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান সংক্রান্ত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। এই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আরও দুইজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া হয়েছে।
নাহিদ ইসলাম এরআগে জানান, দুই দিনের মধ্যেই তার সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হবে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) তার সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ার কথা থাকলেও, একই মামলায় সাক্ষ্য দেওয়া দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীর জেরা শেষ না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।
বুধবার ট্রাইব্যুনালে মাহমুদুর রহমানের জবানবন্দি ও তার ওপর দুই দিনব্যাপী জেরা শেষ হওয়ার পর প্রসিকিউশন পক্ষ জানায়, আজই নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য নেওয়া হবে।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মাহমুদুর রহমানের সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখন নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়েই এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ অধ্যায় সমাপ্ত হবে।’
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের অভিযোগে দায়ের হওয়া এই মামলাটি বর্তমানে বিচারকার্যের প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই–আগস্টের আন্দোলনের সময় দেশে ঘটে যাওয়া হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। শহীদ পরিবারের সদস্য এবং প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা এসব ঘটনার জন্য শেখ হাসিনা, কামালসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার নির্দেশ দেন। প্রসিকিউশন তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ উপস্থাপন করেছে।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রের মোট দৈর্ঘ্য আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠা। এর মধ্যে তথ্যসূত্র রয়েছে দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠা, এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা। সাক্ষী হিসেবে অংশগ্রহণ করছেন ৮১ জন। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা এই মামলার প্রতিবেদন ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দিয়েছে।