প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি আজকের মতো স্থগিত করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। তবে দাবি আদায়ে তারা নতুন দুটি কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন।
ঘোষণা অনুযায়ী, আগামীকাল শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বেলা ২টার মধ্যে দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন জারি না হলে শিক্ষকরা আমরণ অনশন শুরু করবেন। পাশাপাশি রোববার (১৯ অক্টোবর) থেকে দেশের সব এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি পালিত হবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরারের সঙ্গে বৈঠক শেষে আন্দোলনরত শিক্ষকরা এসব কর্মসূচির ঘোষণা দেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল আলোচনায় অংশ নেন।
জাতীয়করণ প্রত্যাশী এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজীজি বলেন, ‘বৈঠকের নামে শিক্ষা উপদেষ্টা প্রহসন করেছেন। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। বিকেল ৫টার মধ্যে সিদ্ধান্ত না এলে “মার্চ টু যমুনা” কর্মসূচি পালন করা হবে।’
তিনি আরও বলেন,
• দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
• সিদ্ধান্ত আগামী বাজেটে নয়, চলতি মাস থেকেই কার্যকর করতে হবে।
• বিকেল ৫টার মধ্যে সিদ্ধান্ত না এলে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
অধ্যক্ষ দেলাওয়ার বলেন, ওনারা আলোচনার নামে আই-ওয়াশ করেছেন। আমরা শিক্ষা উপদেষ্টাকে বলেছি, আমাদের ডাল-ভাতের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু উনি তার বক্তব্যে অনড়। বলেছেন, এর বাইরে তিনি পারবেন না। আমরা বলেছি, এখন ১০ শতাংশ দেবেন, পররবর্তী বাজেটে ১০ শতাংশ দেবেন। পুরো বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাজেটের আগে কয়েক দফায় আমরা চিঠি দিয়েছি, যেন আমাদের শিক্ষকদের বিষয়গুলো দেখা হয়। যে আবেদনে বাড়ি ভাড়া, টিফিন ভাতা, উৎসব ভাতাগুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৩ আগস্টের মধ্যে যদি আমাদের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা না হয়, তবে আন্দোলনে যাওয়া কথাও ছিল। ১১ আগস্ট এনএসআইয়ের পক্ষ থেকে আমাকে ফোন করে বলা হয়, আপনাদের বাড়ি ভাড়া যেন ২ হাজার করা হয়। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়, তখন একই বিষয় আমাদের জানানো হয়; যা আমরা প্রত্যাখ্যান করে শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া চাই।
এদিকে আজ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য বাড়িভাড়া ৫ শতাংশ কিংবা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা করতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আববার (সি আর আবরার)।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘শিক্ষকরা ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ি ভাড়ার দাবি তুলেছেন। তবে সরকার সামর্থ্য অনুসারে ৫ শতাংশ এবং ন্যূনতম ২০০০ টাকা সুপারিশ করছে এখন। নতুন বেতন কমিশনের সুপারিশে সরকার আগামী বছর শিক্ষকদের আরও সম্মানজনক কাঠামো দিতে সচেষ্ট হবে।
এদিকে টানা পঞ্চম দিনের মতো আন্দোলন করেন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন তারা। একই সঙ্গে সারা দেশে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে কর্মবিরতিও।