নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম মুসলিম হিসেবে মেয়র পদে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়ন পেয়েছেন জোহরান মামদানি। তিনি বিশেষ করে যুবসমাজ ও উচ্চশিক্ষিত ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছেন। মঙ্গলবার প্রকাশিত সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, নিবন্ধিত ভোটারদের ৪৬% মামদানি (৩৩)-কে সমর্থন করার কথা জানিয়েছেন। এদিকে নিউইয়র্ক স্টেটের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো (৬৭) ডেমোক্র্যাটিক মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং তার পক্ষে রয়েছে মাত্র ২৪% ভোটার। জরিপে আরও দেখা গেছে, রিপাবলিকান প্রার্থীকে সমর্থন করছেন মাত্র ১৫% এবং বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের পক্ষে রয়েছে মাত্র ৯% সমর্থন।
জোহরান মামদানিকে ধরাশায়ী করতে ট্রাম্পও নানাভাবে তৎপরতা চালাচ্ছেন। এন্ড্রু কুমোর বিজয় ত্বরান্বিত করার অভিপ্রায়ে ট্রাম্প এরিক এডামসকে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত করার প্রস্তাব দিয়েছেন। ট্রাম্পের ধারণা এরিক সরে দাঁড়ালো ক্যুমোর বিজয়ের পথ সুগম হতে পারে। উল্লেখ্য, ঘুষ-দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত মেয়র (ডেমক্র্যাট)এরিক এডামস ইতিমধ্যেই ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছেন মামলা থেকে অব্যাহতির প্রত্যাশায়। তার সুফল এলেও পুনরায় মেয়র নির্বাচনের ময়দান থেকে সরে দাঁড়াতে সম্মত হননি। তিনিও স্বতন্ত্র প্রাথী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। এমনি অবস্থায় ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস এবং সিয়েনা কলেজ’ চালালো এ জরিপ। নিউইয়র্ক স্টেট এ্যাসেম্বলীম্যান হিসেবে চার বছর আগে নির্বাচিত জোহরান ভারতীয় মা চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার এবং উগান্ডার বাবা মাহমুদ মামদানির সন্তান। নিউইয়র্ক সিটিতে দক্ষিণ এশিয়ানদের রাজধানী হিসেবে পরিচিত কুইন্সের জ্যাকসন হাইটস সংলগ্ন এস্টোরিয়া ও লং আইল্যান্ড সিটি নিয়ে গঠিত স্টেট এ্যাসেম্বলী ডিস্ট্রিক্ট-৩৬ থেকে ২০২০ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাথেও সখ্যতা বাড়িয়েছেন।
বাংলাদেশি কমিউনিটি জোহরান মামদানীর পক্ষে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গত শনিবার নিউইয়র্ক সিটির প্রোসপেক্ট পার্কে ‘ড্রাম বীটস’ নামের একটি সংগঠনের আয়োজিত বনভোজন অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করে শতশত প্রবাসীর সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি নিজেও। অনুষ্ঠানে কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফ সবাইকে মামদানীর বিজয়ের জন্য একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান এবং প্রতিটি বাংলাদেশি ভোটারকে নির্বাচনের দিনে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ব্যালট যুদ্ধে অংশ নেওয়ার অনুরোধ করেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শাহানা হানিফ নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম এবং প্রথম বাংলাদেশি কাউন্সিলওম্যান। শাহনা বলেন, জোহরানের বিজয়ে ত কঠোর পরিশ্রমী অভিবাসীগণের অধিকার ও মর্যাদা সুরক্ষিত হবে। উল্লেখ্য, এই বনভোজন আয়োজনের নেপথ্য সংগঠক ছিলেন বাংলাদেশী আমেরিকান কাজী ফৌজিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জুমানী উইলিযাস, রবার্ট ক্যারল, নাজমুল হোসাইন, আব্দুর রহিম হাওলাদার, ফাহাদ সোলায়মান, জে মোল্লা সানী, মেরি জোবায়দা, ইমরান আনসারী, মঈনউদ্দীন মাহবুব, এনায়েত মুন্সী, আকব্দুল কাদের মিয়া, বখতিয়ার উদ্দীন, আহসান হাবিব, নেসার ভূইয়া রাসেল,ইকবাল হায়দার, ও মফিজ উদ্দীন। এতে কমিউনিটির সর্বস্তরে প্রতিনিধিত্বকারিরা জড়ো হয়ে জোহরানের বিজয়ে কাজের সংকল্প ব্যক্ত করেছেন।