যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। স্থানীয় সময় ১৬ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) গভীর রাতে তিনি লন্ডনের স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরে নামেন। দায়িত্বকালীন সময়ে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের এটি মাত্র দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর, যা নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই সফর লন্ডন ও ওয়াশিংটনের ‘বিশেষ সম্পর্ক’ আরও জোরদার করবে। খবর রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই সফরকে কেন্দ্র করে ভূরাজনীতি ও বিনিয়োগের আলোচনার ধারা ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন। সফরের আগে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এবং যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী র্যাচেল রিভস সম্ভাব্য অর্থনৈতিক চুক্তির খসড়া অনেকটা এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তারা সহযোগিতা জোরদার করতে একটি ‘ট্রান্স-আটলান্টিক টাস্কফোর্স’ গঠনের ঘোষণা দেন। স্টারমার চান আর্থিক সেবা, প্রযুক্তি ও জ্বালানি খাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অংশীদারত্ব গড়ে তুলে যুক্তরাজ্যকে আমেরিকান বিনিয়োগের শীর্ষ গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে।
এই সফর ট্রাম্পের জন্য ব্যক্তিগতভাবেও তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এর এক সপ্তাহেরও কম আগে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী চার্লি কার্ককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্পকে বহনকারী এয়ারফোর্স ওয়ান অবতরণের পর তাকে সরকারি হেলিকপ্টার মেরিন ওয়ানে করে কেন্দ্রীয় লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি রাত কাটান মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সরকারি বাসভবন উইনফিল্ড হাউসে। আজ ১৭ সেপ্টেম্বর (বুধবার) রাজা তৃতীয় চার্লস উইনসর ক্যাসেলে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্পকে স্বাগত জানাবেন।
আগামীকাল ১৮ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সফরের দ্বিতীয় দিনে ট্রাম্প ও স্টারমার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি গ্রামীণ বাসভবনে বৈঠকে বসবেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানির কর্মকর্তারা অংশ নেবেন। তাদের মধ্যে থাকবেন এনভিডিয়ার সিইও জেনসেন হুয়াং ও ওপেনএআইয়ের স্যাম অল্টম্যান। আশা করা হচ্ছে, বৈঠক থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক চুক্তি ঘোষণা হবে। ইতোমধ্যে মাইক্রোসফট আগামী চার বছরে যুক্তরাজ্যে ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি এবং গুগল ৫০০ কোটি পাউন্ড বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। এর বড় অংশ লন্ডনে নতুন ডেটা সেন্টার তৈরিতে ব্যয় করা হবে।
উল্লেখযোগ্য যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ২০১৯ সালের জুনে প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়েছিলেন।