ষাটের দশকের ছাত্ররাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের অগ্রসৈনিক, আওয়ামী লীগের সাবেক প্রভাবশালী নেতা এবং সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুর খবর নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে। তবে তার চিকিৎসাধীন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ খবরটি গুজব।
বার্ধক্যজনিত জটিলতায় গত ১০ দিন ধরে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন তোফায়েল আহমেদ। তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয় বলে শনিবার (৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে জানান হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইউসুফ সিদ্দিক। তিনি বলেন, “মৃত্যুর খবর সঠিক নয়।”
শনিবার রাতে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম তার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেয়। এর আগেও একাধিকবার এমন গুজব ছড়িয়েছে।
হাসপাতালের কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি মোরশেদুল রাত পৌনে ১১টার দিকে বলেন, “প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এ ধরনের খবর ছড়াচ্ছে। অনেকেই আমাদের কাছে ফোন করে বিষয়টি জানতে চাইছেন। তিনি এখনো সিসিইউতে ভর্তি আছেন। সঠিক অবস্থা চিকিৎসকরাই বলতে পারবেন। তবে কোনো খারাপ কিছু হলে আমাদের মাধ্যমে সাংবাদিকরা অবশ্যই জানতে পারবেন।”
তার ব্যক্তিগত সহকারী আবুল খায়ের জানিয়েছেন, সাবেক মন্ত্রীর অবস্থা ‘অপরিবর্তিত রয়েছে’।
এদিকে, তোফায়েল আহমেদের জামাতা ডা. তৌহিদুজ্জামান জানান, শনিবার রাত ৮টার দিকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল—রক্তচাপ ও পালস কমে যায়। পরে তা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। তিনি বলেন, “তার অবস্থা ক্রিটিক্যাল, আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে। তবে তিনি এখনো জীবিত আছেন।”
পরিবারের এক সদস্য বলেন, কয়েক বছর ধরেই হুইলচেয়ারে চলাফেরা করেন তোফায়েল আহমেদ। স্ট্রোকের কারণে তার শরীরের একাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়। বাঁ হাত ও পা অবশ হয়ে পড়ায় তিনি চলাফেরায় অক্ষম হয়ে পড়েন।
তোফায়েল আহমেদ ১৯৪৩ সালের ২২ অক্টোবর ভোলা জেলার কোড়ালিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্ররাজনীতি থেকে উঠে আসা এই রাজনীতিক ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন তখন।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তোফায়েল আহমেদ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি ভোলা থেকে একাধিকবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ সরকারের ১৯৯৬ থেকে ২০০১ আমলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। শেখ হাসিনা সরকারের তৃতীয় মেয়াদে ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক।