ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল মঙ্গলবার। এদিন শিক্ষার্থীদের নির্ভয়ে ভোট দিতে কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান।
সোমবার বিকেলে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ওই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, সারা দেশের দৃষ্টি এখন ডাকসু নির্বাচনের দিকে। তিনি উল্লেখ করেন, “ডাকসু নির্বাচন তোমরাই চেয়েছ, প্রত্যাশা করেছ, আর এটি গণ-অভ্যুত্থানের মৌলিক মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সমন্বিত কণ্ঠ গড়ে তোলাই এর উদ্দেশ্য। এসব মূল্যবোধকে তুলে ধরতেই তোমাদের আগ্রহ ও ব্যাপক চাহিদার ভিত্তিতে আমরা এই আয়োজন করেছি। এটি তোমাদেরই অনুষ্ঠান। তোমরা নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে আসবে। আমরা তোমাদের অপেক্ষায় আছি। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তোমরা গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় এবং তা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যকে সমুন্নত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”
নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে আমাদের নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া আছে। সারা দেশ আমাদের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে। আমরা সেই বিশ্বাসের মূল্য দেব। সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে আমরা এই পর্যায়ে এসেছি।’
এবারের ডাকসু নির্বাচনকে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘এবারের নির্বাচনটি বিভিন্ন কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ নির্বাচন ঐতিহাসিক। এবার অনেক কিছু আমরা করেছি, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এর আগে ঘটেনি। আমাদের ৮১০টি বুথ থাকবে। প্রায় ৪০ হাজার ভোটার। প্রথমবারের মতো আমরা হল থেকে বেরিয়ে এসে কেন্দ্রীয়ভাবে ৮টি সমন্বিতভাবে আয়োজিত কেন্দ্রে এ নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছি। সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য সব রকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা, তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা, প্রশিক্ষিত ও নিবেদিতপ্রাণ পোলিং কর্মকর্তারা সাথে থাকবেন।’
ডাকসুর নির্বাচন কর্মকর্তারা নিরপেক্ষ উল্লেখ করেন উপাচার্য বলেন, নির্বাচন কমিশনে এবার চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ ১০ জন নির্বাচন কমিশনার আছেন। তাঁরা বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ, সমাজে তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা আছে। টিভি ক্যামেরার মাধ্যমে ভোট গণনা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। ব্যাপকসংখ্যক সাংবাদিক থাকবেন। তাঁরা মনিটরের কাজটা দেখভাল করবেন।
জয়-পরাজয় মেনে নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে উল্লেখ করে প্রার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, ‘সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে এ পর্যায়ে এসেছি পরস্পর পরস্পরের হাত ধরে। এখন বাকি পথটুকু আমরা খুব স্বাচ্ছন্দ্যে পার হতে পারব বলে বিশ্বাস করি। যেহেতু নির্বাচনপ্রক্রিয়া; কিছু প্রার্থী জিতবেন, কিছু প্রার্থী জিতবেন না। কিন্তু মনে রাখতে হবে, বিজয়ী এবং বিজিত; উভয়েরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। গণতান্ত্রিক একটি প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয়করণ তার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে আপনি আপনার ভূমিকা পালন করলেন। বহু বছর পর আমরা ঐতিহাসিক নির্বাচনপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সেই প্রক্রিয়ায় বিজয়ী এবং বিজিত, উভয় পক্ষই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন, রাখবেন, সেটি নিজেই এটিই বিরাট সার্থকতা।