প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মন্তব্য করেছেন, তহবিল সংকটের কারণে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে মানবিক পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হবে এবং এতে আঞ্চলিক নিরাপত্তার ঝুঁকি অনেকগুণ বৃদ্ধি পাবে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, ‘তহবিল সংকটের কারণে আজকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ন্যূনতম জীবনমান বজায় রাখার আমাদের যৌথ প্রয়াসও ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি তাদের জরুরি সহায়তা কার্যক্রমে মারাত্মক তহবিল ঘাটতির বিষয়ে ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে। অবিলম্বে নতুন তহবিল না এলে, মাসিক রেশন অর্ধেকে নামিয়ে এনে মাথাপিছু মাত্র ৬ মাকিন ডলারে নামতে পারে, যা রোহিঙ্গাদের অনাহার ও অপুষ্টিতে নিমজ্জিত করবে যা তাদেরকে আগ্রাসী কোনো পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করতে পারে।’
তিনি বলেন, “যদি তহবিল আরও বেশি কাটছাঁট করা হয়, তা নিঃসন্দেহে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ঝুঁকি বহুগুণ বৃদ্ধি করবে, যা ক্যাম্পের সীমানার বাইরে পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। তাই আমি বিদ্যমান দাতাদের সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি সম্ভাব্য নতুন দাতাদেরও অনুদান প্রদানের আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে এই বিপর্যয়জনক পরিস্থিতি এড়ানো যায়।”
বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা সংকটের অন্যতম বড় ভুক্তভোগী হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই সংকটের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী রোহিঙ্গারা, আর তাদের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। তবে এটি কোনো দ্বিপাক্ষিক বিষয় নয়; আমরা কেবল দায়িত্বশীল প্রতিবেশী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সদস্য হিসেবে মানবিক দায়িত্ব পালন করছি।”
ড. ইউনূস আরও যোগ করেন, “চলতি মাসের শেষের দিকে অনুষ্ঠিতব্য উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে দৃঢ় আন্তর্জাতিক সংকল্প তৈরি করবে বলে আশা করি। তহবিল সংগ্রহকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বাস্তবসম্মত সহায়তা নিশ্চিত করা হবে, পাশাপাশি একটি আন্তর্জাতিক রোডম্যাপ ও সময়নির্ধারিত কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে।”