ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে একটি ‘স্পষ্ট ও সুস্পষ্ট অবস্থান’ জানতে চেয়েছেন।
মঙ্গলবার স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, “যুদ্ধ শেষ করার আগে আমি সব চুক্তি প্রস্তুত রাখতে চাই। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় অংশীদারদের সমর্থনসহ একটি নথি প্রয়োজন। আর এটি সম্ভব করতে হলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিষ্কার অবস্থান জানা জরুরি।”
তিনি আরও জানান, শিগগিরই যুক্তরাজ্যে সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্প। এ প্রসঙ্গে জেলেনস্কি আশা প্রকাশ করে বলেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে “খুব স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট” আলোচনা করবেন।
ইউরোপকে রুশ তেল না কেনার আহ্বান প্রসঙ্গে জেলেনস্কি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যথেষ্ট শক্তিশালী এবং স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম। কিয়েভকে অতিরিক্ত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
জেলেনস্কির ভাষায়, “আমি নিশ্চিত, যুক্তরাষ্ট্র যথেষ্ট শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে যাতে রাশিয়ার অর্থনীতি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ট্রাম্পেরও এমন ক্ষমতা আছে যা পুতিনকে ভয় দেখাতে পারে।”
তিনি একমত পোষণ করেন যে ইউরোপকে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস কেনা বন্ধ করতে হবে, তবে একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকেও এখনই আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান।
জেলেনস্কি জানান, ইউরোপ ইতিমধ্যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৮টি নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ কার্যকর করেছে। এখন প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী পদক্ষেপ।
এ ছাড়া তিনি আবারও ট্রাম্প ও পুতিনের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে প্রস্তুতির কথা জানালেও মস্কোর সঙ্গে একক বৈঠকের প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন।
গত মাসে আলাস্কায় ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক প্রসঙ্গে জেলেনস্কির মন্তব্য, “ট্রাম্প পুতিনকে অনেক কিছু দিয়েছেন, অথচ পুতিন কোনো মূল্য না দিয়ে রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ পেয়েছেন।”
তার দাবি, পুতিন আসলে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতারণার চেষ্টা করছেন যেন নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যেতে পারেন।
পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় সাম্প্রতিক ড্রোন অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া মূলত ন্যাটোকে পরীক্ষা করছে—দেখতে চাইছে জোট কূটনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে কতটা প্রস্তুত এবং স্থানীয় জনগণ কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়।