বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মুফতি আমির হামজাকে সতর্ক করেছে।
দলীয় সূত্রে তাকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে—রাজনৈতিক কোনো ইস্যুতে যেন তিনি মন্তব্য না করেন।
রোববার এক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মুফতি হামজা। তিনি বলেন, “সংগঠনের দায়িত্বশীলরা আমাকে বলেছেন, মাহফিলে যেন কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য না দিই। দুজন কেন্দ্রীয় নেতা এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তাই আমি এখন থেকে কেবল কুরআনের তাফসির নিয়েই আলোচনা করব। তুলনা করে অন্য কোনো প্রসঙ্গে কথা বলতে গেলে ভুল বোঝাবুঝি হয়, আমি আর সেসবের মধ্যে যাচ্ছি না।”
সাম্প্রতিক বক্তব্যের বিষয়ে আমির হামজা বলেন, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসিন হলে আজান দেওয়া নিয়ে আমার বক্তব্যের সমালোচনা হচ্ছে। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের নাম বলতে গিয়ে মুহসিন হলের নাম বলে ফেলেছি। এটা মুখ ফসকে হয়ে গেছে। আমি এ জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। মুহসিন হলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের জামানায় অনেক জুলুম অত্যাচার হয়েছে। বাথরুমে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করার ঘটনা ছাত্রদের কাছে শুনেছি। এমন তো না সেখানে কোনো জুলুম হয়নি। কিন্তু আমার এভাবে বলা উচিত হয়নি। আগামীতে সতর্ক থাকব। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে মদের বোতল প্রসঙ্গে আমার কথা নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। আমি তো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছিলাম। ওই ক্যাম্পাসে কি হতো সবাই জানে। আমি কি অপরাধ করলাম। এখন বলেছে মদের বোতলে পানি খায়। আমি কি জানি! যদি তাই হয় আমি দুঃখিত। আমি এসব নিয়ে আর কিছুই বলব না।
মুফতি আমির হামজা রাশমিকা মান্দানাকে নিয়ে দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে জানান, মা হাওয়ার সৌন্দর্যের উদাহরণ দিতে গিয়েই তিনি সেই কথা বলেছিলেন। এজন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ভবিষ্যতে আর এ ধরনের মন্তব্য করবেন না। তার কথায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে তিনি আন্তরিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থেকে মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী আমির হামজা সম্প্রতি একাধিক বক্তব্যের কারণে বিতর্কের মুখে পড়েছেন।
এক ওয়াজ মাহফিলে তিনি দাবি করেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসিন হলে আজান দিতে দেওয়া হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি বলছেন— “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসিন হলে ১৬ বছর আজান দিতে দেয়নি জালেমরা। ছাত্রলীগের ভাইদের ঘুম ভাঙবে বলে ফজরের আজান দিতে দিত না। তবে ডাকসুতে শিবির প্যানেল জয়ী হওয়ার পরদিন থেকেই আজান শুরু হয়।”
তার এই বক্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ছাত্রদল তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলে। এমনকি ছাত্রশিবিরের সাবেক ও বর্তমান নেতারাও তার মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন।