বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দলের রাজপথে আন্দোলন গণতন্ত্রের জন্য ভালো সংকেত নয়। তিনি বলেন, কর্মসূচির কোনো প্রয়োজন ছিল না। আলোচনা তো শেষ হয়নি এখনো। আলোচনা চলা অবস্থায় এ ধরনের কর্মসূচির অর্থই হচ্ছে, একটা অহেতুক চাপ সৃষ্টি করা। যেটা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয় এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারেও শুভ নয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরার পর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে স্ত্রী রাহাত আরাকে নিয়ে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরেন মির্জা ফখরুল। গত ১০ সেপ্টেম্বর স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান তিনি। আলোচনার টেবিলে সমাধান হচ্ছে না বলেই রাজপথে নেমেছে-জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের এমন বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমার পালটা প্রশ্ন, এভাবে রাজপথে এলেই কি সমাধান হয়ে যাবে? বিএনপি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এই পরিবর্তনের পরে আমরা কিন্তু কোনো ইস্যুতে রাজপথে আসিনি। আমরা আলোচনার মাধ্যমেই সব কিছু সমাধান করতে চাচ্ছি। আমার বিশ্বাস এটা আলোচনার মাধ্যমে শেষ হবে।
পিআর-এর বাংলাদেশে প্রয়োজনীয়তা নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বারবারই বলেছি, পিআর-এর ব্যাপারে আমাদের অবস্থান খুব পরিষ্কার। আমরা পিআর-এর পক্ষে নই। বাংলাদেশে পিআর-এর কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। আর জুলাই সনদের আলোচনা চলছে। অনেকগুলো ইস্যুতে আমরা একমত হয়েছি। সেই বিষয়গুলো নিয়ে সামনে এগোলেই হয়। তিনি বলেন, পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এখানে যেটাই করা হোক সেটাতে জনগণের সমর্থনটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। জনগণের সমর্থন আসে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। সংসদই একমাত্র অধিকার রাখে সংবিধান পরিবর্তন করার।
এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের নিষিদ্ধকরণের বিষয়টি নিয়ে আমাদের অবস্থান আগেই পরিষ্কার করেছি—আমরা কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তারেক রহমান খুব শিগ্রই দেশে ফিরবেন।
জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ পরিষদে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, এখনো এই বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। যদি আলোচনা হয়, তখন হয়তো আমরা জানতে পারব। তবে আমার মনে হয়, সেখানে দেশের গণতন্ত্রের উন্নয়ন এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নই প্রাধান্য পাবে।
দেশের বাইরের কোনো সিদ্ধান্তের প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আমরা আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে, ঐক্যবদ্ধভাবে নেব। সবসময় আমরা নিজ দেশের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিয়েছি, এবং ভবিষ্যতেও নিজেই নেব; বাইরের কোনো হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই।